PM Kusum Yojana 2024: ভারত হল কৃষি প্রধান দেশ। তাই কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় তথা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একাধিক পরিকপনা নেওয়া হয়েছে। এমনকি বেশ কিছু প্রকল্পও চালু করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম প্রধানমন্ত্রী কুসুম সোলার পাম্প যোজনা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। যার দ্বারা কৃষকেরা সোলার পাম্প কিনতে পারেন। কিভাবে আবেদন করতে হবে? কতটা ভর্তুকি পাওয়া যাবে? সমস্ত তথ্য জানানো হবে আজকের প্রতিবেদনে।
প্রধানমন্ত্রী কুসুম যোজনা (PM Kusum Yojana)
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষকদের উন্নতির তথা পরিবেশ রক্ষার জন্য ২০১৯ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী কুসুম যোজনা চালু করেন। এই প্রকল্পটিকে প্রধানমন্ত্রী কিষান উরজা সুরক্ষা ইভম উত্থান মহাবিয়ান নামেও জানা যায়।
এই প্রকল্পের দৌলতে কৃষকদের জমিতে জল সেচ করার জন্য যাতে বিদ্যুতের খরচ বাঁচে তার জন্য সোলার পাম্প বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। তাছাড়া সোলার বসিয়ে জল সেচ করে অনুর্বর জমিকে আবারও চাষযোগ্য করে তোলাও যেতে পারে। তাই সরকার ভর্তুকি দিয়ে সোলার পাম্প বসাতে কৃষকদের আর্থিক সাহায্য করে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশই রাজ্য সরকারও কিছু টাকা দেয়।
পিএম কুসুম যোজনা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
প্রকল্পের নাম | প্রধানমন্ত্রী কুসুম সোলার পাম্প প্রকল্প (PM Kusum Yojana) |
প্রদানকারী সংস্থা | কেন্দ্রীয় সরকার |
কারা সুবিধা পাবেন | ভারতের সমস্ত কৃষক |
কি সুবিধা পাওয়া যাবে | সোলার সেচ পাম্প |
ঋণের পরিমাণ | কেন্দ্রের তরফে ৬০% ব্যাঙ্ক ৩০% ও বাকি ১০% কৃষক |
আবেদনের পদ্ধতি | অনলাইন |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | https://pmkusum.mnre.gov.in |
হেল্পলাইন নাম্বার | 1800-180-3333 (Toll Free) 011-2436-0707 / 011-2436-0404 |
পিএম কুসুম সোলার পাম্প যোজনার সুবিধা : (PM Kusum Yojana Benefits)
আপনি যদি পিএম কুসুম যোজনায় বা Pradhan Mantri Kisan Urja Suraksha Evam Utthan Mahabhiyan এ আবেদন করেন তাহলে কি কি সুবিধা পাবেন সেটা নিচে জানানো হলঃ
- এই প্রকল্পে ভারতের যে কোনো জায়গার কৃষকেরা আবেদন করতে পারেন সৌর সেচ পাম্প পাওয়ার জন্য।
- সোলার প্যানেল লাগানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৬০% আর্তগিক সাহায্য করবে বাকি ৩০% টাকা ব্যাঙ্কের তরফ থেকে লোন দেওয়া হবে। শুধুমাত্রই ১০% টাকা কৃষককে দিতে হবে শুরুতে।
- সোলার বিদ্যুতে পাম্প চলার কারণে যেখানে বিদ্যুতের সমস্যা থাকে সেখানেও দিব্যি জল সেচ করা যাবে কারণ সোলার দিয়ে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যেতে পারে।
- বাজারের থেকে অনেকটাই কম খরচে সোলার সেচ পাম্প প্রদান করা হবে।
- সৌর প্যানেল থেকে উৎপন্ন হওয়া বিদ্যুৎ অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটা বিক্রি করে প্রতিমাসে প্রায় ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত যায় করতে পারবেন কৃষকেরা।
- এই প্রকল্পের আওতায় ১০ লক্ষ গ্রিড সংযুক্ত করে সোলার পাম্প সোলারাইজেশন করা হবে। ২০২৪ সালের মধ্যেই ১৭.৫ লক্ষ সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্প স্থাপনের টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
- সৌরবিদ্যুতে পাম্প চলার কারণে ডিজেলের খরচ যেমন কমবে তেমনি ডিজেল পোড়ার কারণে হওয়া পরিবেশ দূষণও হবে না।
- অনুর্বর জমিতে সোলার পাম্প বসানোর ফলে একদিকে যেমন অনুর্বর জমি কাজে লাগবে তেমনি বিদ্যুৎ বিক্রি করে কিছু টাকা আয়ও করা যাবে।
- এই প্রকল্পে আবেদন গ্রহণ হলে টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে।
পিএম কুসুম যোজনায় আবেদনের জন্য যোগ্যতাঃ (PM Kusum Yojana Eligibility Criteria)
আপনি যদি এই প্রকল্পে আবেদন করতে চান তাহলে কিছু যোগ্যতা রয়েছে সেগুলো পূরণ করতে হবে। সেগুলি হলঃ
- আবেদনকারীকে অবশ্যই একজন কৃষক হতে হবে ও ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- ক্ষুদ্র জমির মালিক বা প্রান্তিক কৃষকেরাও পিএম কুসুম প্রকল্পে আবেদন করতে পারবে।
- আবেদনকারীর বৈধ আধার কার্ড ও চালু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
- এই প্রকল্পে ০.৫ মেগাওয়াট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ এর জন্য আবেদন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতি মেগাওয়াটের জন্য মোটামুটি ২ হেক্টর জমির প্রয়োজন হবে।
সোলার পাম্প বসানোর জন্য কতটা জমির প্রয়োজন? (Land needed for Solar Pump Installation)
আগেই বলা হয়েছে প্রতি মেগাওয়াটের জন্য ২ হেক্টর জমির প্রয়োজন। সেই হিসাবে আপনি যদি সর্বোচ্চ ক্ষমতার সোলার পাম্প বসাতে চান তাহে ৪ থেকে ৫ হেক্টরের জমি প্রযোজন হবে। যার দরুন বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। এই বিদ্যুৎ যেমন পাম্প চালানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে তেমনি বিক্রি করে কিছু অতিরিক্ত উপার্জনও করা যাবে।
পিএম কুসুম প্রকল্পে কিভাবে আবেদন করতে হবে? (How to Apply for PM Kusum Yojana?)
➥ এই প্রকল্পে আবেদন করতে চাইলে প্রথমেই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে।
➥ এরপর ওয়েবসাইটে গিয়ে PM-KUSUM লেখা অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর “Online Registration” এ ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া শুরু করতে হবে।
➥ রেজিস্ট্রেশনের সময় নাম, ঠিকানা, আধার নাম্বার থেকে মোবাইল নাম্বার ও ব্যাঙ্কের তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে একবার সবটা মিলিয়ে নিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
➥ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে যাওয়র পর সোলার পাম্প বসানোর জন্য ১০% টাকা জমা করতে হবে।
➥ টাকা জমা করার কিছুদিনের মধ্যেই জমিতে সোলার পাম্প বসানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ মৎস্যজীবীরা বছরে পাবে ১০,০০০ টাকা, দেখে নিন সমুদ্র সাথী প্রকল্পে আবেদনের পদ্ধতি
আবেদনের জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন : (Documents needed for Applicaltion)
- আধার কার্ড
- ভোটার কার্ড
- রেশন কার্ড
- চালু ব্যাঙ্কের পাশবইয়ের প্রথমপাতা
- জমির নথিপত্র
- আয়ের শংসাপত্র
- আধার কার্ডের সাথে লিংক করা মোবাইল নাম্বার
- কালার পাসপোর্ট সাইজ ছবি
পিএম কুসুম যোজনার আবেদন ফি : (Application Fees)
পিএম কুসুম যোজনায় আবেদন করতে চাইলে বিভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার পাম্পের জন্য আবেদন করতে পারেন। উৎপাদন ক্ষমতার উপরে আবেদনের ফি নির্ভর করবে। নিচে ফি বিবরণ দেওয়া হলঃ
- 0.5 মেগাওয়াট এর জন্য – 2500+GST
- 1 মেগাওয়াটের জন্য – 5000+GST
- 1.5 মেগাওয়াটের জন্য – 7500+GST
- 2 মেগাওয়াটের জন্য – 10000+GST
পিএম কুসুম যোজনা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন
PM Kusum Yojona এর জন্য কত টাকা খরচ হয়?
এই প্রকল্পে ৬০% টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার, ৩০% ঋণ দেয় ব্যাঙ্ক ও বাকি ১০% খরচ দিতে হয় কৃষককে।
কত টাকা সোলার সাবসিডি পাওয়া যাবে?
প্রতি কিলোওয়াটের জন্য ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত সাবসিডি পাওয়া যেতে পারে।
PM Kusum Yojona এর জন্য নূন্যতম কতটা জমির প্রয়োজন?
১ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলারের জন্য নূন্যতম ২ হেক্টর জমির প্রয়োজন।